অনুগল্প (ভালবাসার ছোট্ট একটি গল্প ৫)
অনুগল্প (ভালোবাসার ছোট্ট একটি গল্প ৫)
ভুল ভালবাসা
শপিং এ এলে কেনাকাটার ক্ষেত্রে সব সময় নীরার পছন্দ প্রাধান্য পেলেও আজ নীরা বলে দিয়েছে এবার সব কিছু লিমনের পছন্দমত কেনা হবে। অনেকদিন পর বাড়ি যাচ্ছে তারা। নীরার ভাইয়ের বিয়ে। লিমন ব্যাংকে চাকরি করে। ছুটির দিন ছাড়া নীরাকে নিয়ে বের হওয়ার সময়ই পায় না। নীরা শপিং এর লিস্টের দিকে চোখ বুলাতেই পরিচিত কারো কন্ঠ শুনে তার কান উৎকর্ণ হয়ে উঠলো। শপিং মলে তাদের পাশেই এক দম্পতির কথাবার্তা তার মনোযোগ আকৃষ্ট করলো। ঘুরে তাকিয়েই দেখলো যা ভেবেছিল তাই। ওর ক্লাসমেট রাকিব। রাকিব ওর স্ত্রীর সাথে কথা কাটাকাটি করছে। দোকানের ভিতর এভাবে পারিবারিক সিনক্রিয়েটে অনেকেই অপ্রস্তুত হয়ে গেল। কি আশ্চর্য! তারা একই শহরে বসবাস করছে অথচ কখনো তা জানতে পারেনি। মাসুদের কাছে শুনেছে এক ধনীর দুলালীকে বিয়ে করে রাকিব ঢাকা স্থায়ী হয়েছে। কি ভেবে নীরা নিজেকে আড়াল করে নিল।
নীরা আর রাকিব একই কলেজে পড়তো। অনার্স ফার্স্ট ইয়ার থেকে রাকিব নীরাকে পছন্দ করতো। তাকে প্রপোজও করেছে। কিন্তু নীরা ফিরিয়ে দিয়েছে প্রত্যেকবার। কারণ নীরা তার মাকে খুব ভালবাসে। আর সে তার মাকে একটা কথা দিয়েছে। তা স্বত্বেও রাকিব নীরার পিছু ছাড়েনি। বিভিন্ন ভাবে নীরার পাশে থেকে তার আস্থাভাজন হতে চেয়েছে।
নীরা আর রাকিব একই কলেজে পড়তো। অনার্স ফার্স্ট ইয়ার থেকে রাকিব নীরাকে পছন্দ করতো। তাকে প্রপোজও করেছে। কিন্তু নীরা ফিরিয়ে দিয়েছে প্রত্যেকবার। কারণ নীরা তার মাকে খুব ভালবাসে। আর সে তার মাকে একটা কথা দিয়েছে। তা স্বত্বেও রাকিব নীরার পিছু ছাড়েনি। বিভিন্ন ভাবে নীরার পাশে থেকে তার আস্থাভাজন হতে চেয়েছে।
ক্লাস নাইনে থাকতে এক দুর্ঘটনায় নীরার বাবা মারা যান। নীরার একমাত্র ভাই তখন কলেজে পড়তো। পড়া বাদ দিয়ে একটা চাকরি নিয়ে তার ভাই সংসারের হাল ধরে। নীরাকে কখনো কস্ট পেতে দেয়নি তার ভাই। নীরা সব জানে। ও যেদিন কলেজে ভর্তি হয় সেদিন ওর মা ওকে বলে, মা তুই বড় হইছিস। আমাদের কষ্টের কথা তোর অজানা নেই। এমন কোনো কাজ তুই করিস না যাতে আমার কিংবা তোর ভাইকে সমাজের কাছে ছোট হতে হয়। দোয়া করি ভাল রেজাল্ট করে আমাদের মুখ উজ্জল কর আর তোর বাবার স্বপ্ন পূরণ কর। নীরা কেঁদে মাকে জড়িয়ে ধরে।
ফাইনাল ইয়ারের প্রথম দিকে নীরা রাকিবের মধ্যে কেমন একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করে। রাকিব নিয়মিত ক্লাসে আসতো না। দেখা হতো খুব কম। নীরা লক্ষ্য করলো রাকিবের প্রতি কেমন যেন একটা দুর্বলতা কাজ করছে। একদিন রাকিবকে ডেকে সে কথাটা বলেই ফেলে। কিন্তু বিক্রিয়াটা তখনি অসমতায় রুপ নেয়। রাকিব বলে সে আর কাউকে ভালবাসে না। নীরা মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরে। ইশ! কথাটা কেনই বা বলতে গেল!
অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে রাকিব পাশ করে বের হয় আর নীরাসহ কয়েকজনের দুর্ভাগ্যক্রমে রেজাল্ট ফেল আসে। যাদের অনেকেরই গড় রেজাল্ট ফার্স্ট ক্লাসের উপরে। অনাকাঙ্ক্ষিত রেজাল্টের পর নীরা কেমন যেন হয়ে পরে। কারো সাথে যোগাযোগ করতো না। সারাদিন ঘরেই থাকতো। ওকে নিয়ে ওর আম্মারও দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না। অবশেষে নীরা শক্ত হয়। বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সে পরের বার পরীক্ষা দেয় সে। ফার্স্ট ক্লাস নিয়ে অনার্স কমপ্লিট করে নীরা। মা আর ভাইয়ের পছন্দে লিমনকে বিয়ে করে নীরা।
রাকিব আর ওর স্ত্রী কিছুক্ষণ হয় চলে গেছে। লিমনের ডাকে সম্বিত ফিরে পায় নীরার। কি ব্যাপার, নীরা কি ভাবছো এতো? নীরা কিছু বলেনা। লিমনের হাত চেপে ধরে শক্ত করে।।
#সত্য_কাহিনি_অবলম্বনে
#ভাল_থেকো_গল্পের_নায়িকাটি
#সুখ_হোক_তোমার_ছায়াসঙ্গী
গল্পটি লিখেছেনঃ বাবুল ঘোষ
(ফেসবুক পেজ কতৃক সংরক্ষিত)
অনুগল্প (ভালবাসার ছোট্ট একটি গল্প ৫)
Reviewed by Unknown
on
January 31, 2018
Rating:
Reviewed by Unknown
on
January 31, 2018
Rating:


No comments